ফুটবল একটি জনপ্রিয় দলগত খেলা যা সারা বিশ্বে খেলা হয়। এটি খেলার জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়মাবলী রয়েছে এবং সঠিকভাবে খেলতে হলে এই নিয়মগুলো জানা জরুরি। নিচে ফুটবল খেলার নিয়মাবলী এবং খেলার পদ্ধতি বিস্তারিতভাবে দেওয়া হলো:

দল গঠন:
- প্রতি দলে ১১ জন খেলোয়াড় থাকে (১ জন গোলকিপারসহ)।
- অতিরিক্ত কয়েকজন বদলি খেলোয়াড় থাকতে পারে (সাধারণত 3-5 জন পরিবর্তন করার সুযোগ থাকে)।
খেলার সময়সীমা:
- পূর্ণ খেলা হয় ৯০ মিনিটে, যা দুইটি ৪৫ মিনিটের অর্ধে বিভক্ত।
- প্রতিটি অর্ধের পরে ১৫ মিনিট বিরতি থাকে।
- অতিরিক্ত সময় এবং পেনাল্টি শুটআউট হতে পারে যদি খেলা অমীমাংসিত থাকে (বিশেষ করে নকআউট ম্যাচে)।
মূল নিয়মাবলী:
০১. কিক-অফ (Kick-off):
- খেলা শুরু বা গোল হওয়ার পর মাঝমাঠ থেকে খেলা শুরু হয়।
০২. গোল (Goal):
- বল পুরোপুরি গোলপোস্টের মধ্যে গেলে (লাইন পেরিয়ে), গোল হিসেবে গণ্য হয়।
০৩. অফসাইড (Offside):
- খেলোয়াড় যদি প্রতিপক্ষের শেষ ডিফেন্ডারের চেয়ে এগিয়ে গিয়ে বল পান এবং তাৎক্ষণিক গোলের উদ্দেশ্যে থাকেন, তবে অফসাইড ধরা হয়।
০৪. ফাউল এবং ফ্রি কিক (Foul & Free Kick):
- প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়কে ধাক্কা দেওয়া, ঠেলা, বা বাধা দিলে ফাউল হয় এবং বিপক্ষ দল ফ্রি কিক পায়।
০৫. পেনাল্টি কিক:
- ডি-বক্সের ভিতরে ফাউল হলে পেনাল্টি কিক দেওয়া হয়।
৬. থ্রো-ইন (Throw-in):
- বল মাঠের সাইডলাইন পেরিয়ে গেলে, বিপক্ষ দল দুই হাত দিয়ে মাথার উপর দিয়ে বল ছুঁড়ে খেলা শুরু করে।
৭. কর্নার কিক ও গোল কিক:
- প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের স্পর্শে বল গোল লাইনের বাইরে গেলে কর্নার কিক হয়।
- যদি নিজের দলের খেলোয়াড় স্পর্শ করে বল বাইরে পাঠায়, তাহলে গোল কিক হয়।
কার্ড সিস্টেম:
- হলুদ কার্ড (Warning): সতর্কবার্তা হিসেবে দেওয়া হয়।
- লাল কার্ড (Expulsion): সরাসরি বা দুটি হলুদ কার্ডে পর খেলোয়াড় মাঠ থেকে বের করে দেওয়া হয় এবং আর খেলতে পারেন না।
গোলকিপারের নিয়ম:
- শুধু গোলকিপারই ডি-বক্সের ভেতরে বল হাতে নিতে পারেন।
- ডি-বক্সের বাইরে এসে বল ধরলে সেটা ফাউল।
খেলার জন্য যা যা দরকার:
- একটি বল (আন্তর্জাতিক মানে সাইজ ৫)
- জার্সি, শর্টস, জুতা (স্টাডসহ)
- একটি খেলার মাঠ (লম্বা 90–120 মিটার এবং প্রস্থ 45–90 মিটার)
- গোলপোস্ট দুটি (প্রতি পাশে একটি করে)
- রেফারি ও সহকারী রেফারি
ফুটবল খেলার কৌশল ও টিপস:
- বল কন্ট্রোল শিখুন — পাস, ড্রিবল, ট্র্যাপ ইত্যাদি।
- টিমওয়ার্ক – একা খেলার চেয়ে দলীয় খেলা বেশি কার্যকর।
- ফিটনেস – নিয়মিত অনুশীলন ও দৌড় ঝাঁপে শরীর ফিট রাখতে হবে।
- দিক পরিবর্তন ও গতি – বিপক্ষকে ধোঁকা দিতে ডান-বাম ও গতি পরিবর্তন করতে শিখুন।
- পজিশন বোঝা – কে কোন পজিশনে খেলছে তা জানা দরকার (ডিফেন্ডার, মিডফিল্ডার, ফরোয়ার্ড ইত্যাদি)।
আপনি যদি শিখতে শুরু করতে চান:
- স্থানীয় ক্লাবে যোগ দিন বা বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে শুরু করুন।
- ইউটিউব/অনলাইন ভিডিও দেখে ড্রিল অনুশীলন করুন।
- নিয়মিত খেলার মাধ্যমে স্কিল উন্নয়ন করুন।